T20 বিশ্বকাপ জিতল ভারত। 13 বছর পর ভারতে এল বিশ্বকাপ
ভারত 7 রানে জয়ী
ভারত -176/7
দক্ষিণ আফ্রিকা -169/8
কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপ জিতল ভারত। 13 বছর পর ভারতে এল বিশ্বকাপ। টানটান উত্তেজনার মধ্যে শেষ ওভারে কাটল এই ফরম্যাটে ভারতের 17 বছরের খরা। নভেম্বরের মোতেরার কান্নার রাতের যন্ত্রণায় পড়ল মলম। রোহিত শর্মার হাতে উঠল বিশ্বকাপ। কোচিং কেরিয়ারে বিশ্বসেরার তকমা পেলেন রাহুল দ্রাবিড়ও। আর সেই ম্যাচের পরই নায়ক বিরাট কোহলির গলায় শোনা গেল আন্তর্জাতিক টি-20 থেকে অবসরের ঘোষণা। রাতেই ভারতীয় দলকে অভিনন্দনে ভরিয়ে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে প্রাক্তন ক্রিকেট তারকারা।
পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচে অবশ্য শেষ ওভার পর্যন্ত ছিল অনিশ্চয়তা। যশপ্রীত বুমরাহর স্বপ্নের ওভার মোড় ঘুরিয়েছিল ম্যাচের। কিন্তু তখনও ছয় বলে চাই 16। হার্দিক পান্ডিয়া প্রথম বলটাই করলেন ফুলটস। চালালেন ডেভিড মিলার। 83’র বিশ্বকাপে কপিল দেবের নেওয়া ভিভ রিচার্ডসের ক্যাচকে মনে করিয়ে তা অবিশ্বাস্য দক্ষতায় তালুবন্দি করলেন সূর্যকুমার যাদব। সেই রিলে ক্যাচেই কাটল জয়ের সংশয়।
কোহলির দুরন্ত ইনিংসের সুবাদে টস জিতে ব্যাট করে 7 উইকেটে 176 তুলেছিল ভারত। এই ফরম্যাটের ফাইনালে যা সর্বাধিক। দক্ষিণ আফ্রিকা আট উইকেটে থামল 169 রানে। 27 বলে 52 রান করেও ট্র্যাজিক নায়ক হয়ে রইলেন হেনরিখ ক্লাসেন।
এদিন শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি ভারতের। পাওয়ার প্লে’তে পাঁচ ওভারের মধ্যে 3 উইকেটে 34 হয়ে গিয়েছিল ভারত। ড্রেসিং-রুমে তখন চলে এসেছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, ঋষভ পন্থ ও সূর্যকুমার যাদব। পরিত্রাতা হয়ে ওঠেন সেই বিরাটই। ক্রিকেটে বলা হয় ‘ফর্ম ইজ টেম্পোরারি, ক্লাস ইজ পার্মানেন্ট’। প্রবল সমালোচিত কোহলির এদিনের ইনিংসে সেটাই প্রতিফলিত। পাঁচে নামা অক্ষর প্যাটেলকে নিয়ে ইনিংস মেরামতে নামেন বিরাট। চলতি আসরে যেভাবে গোড়া থেকেই তুলে মারার চেষ্টা করছিলেন, সেই টেমপ্লেট ছুড়ে ফেলে ফিরে যান অ্যাঙ্করের ভূমিকায়। গড়েন বড় ইনিংসের ভিত। 48 বলে পঞ্চাশের পর অবশ্য তোলেন ঝড়। শেষ পর্যন্ত 128.81 স্ট্রাইক রেটে দুটো ছক্কা ও ছ’টা বাউন্ডারিতে সাজান 76 রানের ইনিংস। অক্ষর অবশ্য ছিলেন বেশি আক্রমণাত্মক। মারেন চারটি ছক্কা ও একটি চার। চলতি আসরে তুমুল সমালোচিত হচ্ছিলেন শিবম দুবে। এদিন তিনি অবশ্য টিম ম্যানেজমেন্টের আস্থার মর্যাদা দিলেন।
প্রোটিয়াদের শুরুটাও ভালো হয়নি। যশপ্রীত বুমরাহর স্বপ্নের আউটসুইংয়ে অফস্টাম্প ছিটকে যায় রিজা হেনড্রিকসের। এবারের আসরে এটাই সম্ভবত সেরা ডেলিভারি। পরের ওভারেই অধিনায়ক আইডেন মার্করাম খোঁচা দেন অর্শদীপ সিংকে। 12 রানে 2 উইকেট খোয়ানো দক্ষিণ আফ্রিকাকে লড়াইয়ে ফেরান কুইন্টন ডি’কক ও ট্রিস্টান স্টাবস। অক্ষরের বলে স্টাবস বোল্ড হলেও রানের গতি কমেনি। ক্লাসেন ক্লাবস্তরে নামিয়ে আনেন কুলদীপ, অক্ষরদের। হার্দিকের বলে তিনি ফিরতেই পাল্টায় চিত্রনাট্য। তখন তিন ওভারে দরকার 22 রান। তারপরই শেষ ওভারে হার্দিকের প্রথম বলে সূর্যর স্বপ্নের ক্যাচেই মিলল জয়ের সিলমোহর।
কপিল দেব
চক দে ইন্ডিয়া। অনবদ্য পারফরম্যান্স। ব্যাটারদের পাশাপাশি কঠিন সময়ে উজাড় করে দিয়েছে বোলাররা। গোটা দলকে অফুরান অভিনন্দন।
শচীন তেন্ডুলকর
প্রশংসার ভাষা নেই। 13 বছর পর বিশ্বসেরা ভারত। আইপিএল শুরু হওয়ার পর প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়। যে কোনও ফরম্যাটে ধারাবাহিকভাবে এমন দাপট দেখানো মোটেও সহজ নয়। দেশকে গর্বিত করেছে ক্রিকেটাররা। বীরেন্দ্র সেওয়াগ